Header Ads

লকডাউনের দূষণবিহীন আকাশে অচেনা তারাদের হদিশ পেলেন বাংলার বিজ্ঞানী

ঝলমলে রাতের তারাভরা আকাশের স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে লকডাউন। দূষণহীন পৃথিবী থেকে এখন স্পষ্ট দেখা যায় শুকতারা, অর্থাৎ ভিনাস গ্রহ। করোনা পরিস্থিতিতে ঘরবন্দি রয়েছেন মানুষ। এমনই থমকে যাওয়া পরিবেশে টেলিস্কোপে চোখ রেখে অবাক একদল বাঙালি বিজ্ঞানী। ঝাঁকে ঝাঁকে তারার খোঁজ পেয়েছেন তাঁরা। একে বহু দূরে সেই তারাদের বাস, তার ওপর মাত্রাতিরিক্ত দূষণের বেড়াজাল, ফলে কখনওই তারাগুলির খোঁজ জানতে পারেন নি বিজ্ঞানীরা।

দূষণের চাদরে ঢাকা পড়েছিল পৃথিবী। করোনার আবহ সেই চাদরকে অনেকাংশে সরিয়ে দিয়েছে বলে জানাচ্ছেন পরিবেশবিদরা। যার ফলে মাত্র ২৪ ইঞ্চি লেন্সের টেলিস্কোপেই ধরা দিয়েছে সেই তারাদের দল। কলকাতার ‘ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজিক্স (আইসিএসপি)’-এর বাঙালি গবেষকরা এখন অচেনা তারাদের ঠিকুজিকোষ্ঠী বের করতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন।

আইসিএসপি-র অধিকর্তা তথা বিশিষ্ট জ্যোতির্বিজ্ঞানী সন্দীপ চক্রবর্তী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, “কলকারখানা ও যানবাহন থেকে ছড়িয়ে পড়া ধূলিকণা যে শুধুমাত্র মানুষের শ্বাসপ্রশ্বাসে অসুবিধা ঘটায় এমনটা নয়, বায়ুমন্ডলের ১২ কিলোমিটার জুড়ে বাতাসের সঙ্গে মিশে রাজত্ব করে তারা। আকাশ থেকে আগত ফোটন কণা বা আলোর কণা টেলিস্কোপ বা আপনার চোখ পর্যন্ত আসার আগেই ওই ধূলিকণাদের দেখতে পায় সে। সেই আলো ওই ধূলিকণায় লেগে ঠিকরে অন্যদিকে চলে যায়। আপনার কাছে আর পৌঁছতে পারে না। যার ফলে অনেক তারা দেখা যেত না। আবার বিচ্ছুরণের ফলে অনেক তারার উজ্জ্বলতা কম মনে হত। কাজেই এখন দূষণের মাত্রা কমে যাওয়ায় অনেক তারার খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।”

সন্দীপবাবু আরও বলেন, “টেলিস্কোপেরও নিজস্ব একটা পরিমাপ থাকে। একটা নির্দিষ্ট মানের ফোটনকণা টেলিস্কোপে এসে পৌঁছলে সেই তারা দেখা যায়। কিন্তু তার চেয়ে কম হয়ে গেলে সেই তারার হদিশ পাওয়া যাবে না।” এতদিন দূষণের কারণে তারার আলোককণা টেলিস্কোপে ধরা দিচ্ছিল না। ফলে, তাদের অস্তিত্ব সম্পর্কে ধারণা ছিল না ওই বাঙালি গবেষকের। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর তিন ছাত্র, অসীম সরকার, শ্যাম সরকার ও পবিত্র শীল টেলিস্কোপ মারফত দেখেছেন, এতদিন যদি ১০০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত কোনও তারার সন্ধান পাওয়া যেত, করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের আকাশে এখন ২০০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে থাকা তারার খোঁজ মিলছে। অর্থাৎ দ্বিগুণ দূরের তারারাও এখন দৃশ্যমান।

আকাশ আগের চেয়ে দশ শতাংশ আরও বেশি অন্ধকার হয়েছে। একইসঙ্গে ৪০ শতাংশ উজ্জ্বল হয়েছে সব তারা। যার ফলে নতুন অতিথিদের কিছু ক্ষেত্রে খালি চোখেও দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইসিএসপি-র বাঙালি বিজ্ঞানীর দল।

No comments

Welcome To My Blog.

Powered by Blogger.