ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দেশে ধর্মের ভেদাভেদ আসলে কত ক্ষুদ্র করোনা অতিমারী সেই শিক্ষাই দিল ভারতবাসীকে, এমনটাই মনে করছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে আপ প্রধান বলেন যে যেভাবে ধর্ম না দেখেই দাতার প্লাজমা দেওয়া হচ্ছে গ্রহীতাকে এবং সুস্থতার এ লক্ষণ দেখা যাচ্ছে তা শিক্ষণীয়।
এদিন আপ প্রধান বলেন, “লোক নায়েক হাসপাতালে সংকটজনক অবস্থায় ভর্তি হওয়া এক রোগীকে প্লাজমা থেরাপি দেওয়ার পর তাঁর দেহে সুস্থতার লক্ষণ দেখা গিয়েছে। এর আগে ক্লিনিকাল প্লাজমা পরীক্ষার অংশ হিসাবে ছ’জন রোগীকে দিল্লির সরকারী হাসপাতালে প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হয়েছিল। উল্লেখ্য, সদ্য যারা করোনামুক্ত হয়েছেন সেই সব রোগীদের থেকে রক্ত সংগ্রহ করে প্লাজমা আলাদা করে তা থেকে অ্যান্টিবডি তৈরি করে করোনা আক্রান্তদের দেহে দেওয়া হচ্ছে
সাংবাদিক বৈঠক থেকেই আম আদমি প্রধান বলেন, “আমার কাছে এটাই মনে হয়েছে যে আগামীকাল একজন হিন্দু রোগী যদি সংকট অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি হয়তো কোনও মুসলিমের দেওয়া প্লাজমায় সুস্থ হয়ে উঠলেন। কিংবা কোনও হিন্দুর দেওয়া প্লাজমায় জীবন বাঁচতে পারে মুসলিমের। সর্বশক্তিমান তো আমাদের মধ্যে এমন প্রাচীর তৈরি করেননি। যা করেছি সেটা আমাদের তৈরি করা।”
প্রসঙ্গত, এই করোনা অতিমারীর আগে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দেখেছিল দিল্লি। যার ফলে ৫০ জনেরও বেশি লোক মারা গিয়েছিল এই দাঙ্গায়। পরবর্তীতে তাবলিগি জামাতের ক্রমশ করোনা হটস্পট হয়ে ওঠা এবং সাম্প্রদায়িকতার কেন্দ্রবিন্দুতে চলা আসা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। রবিবার সেই প্রেক্ষাপটেই কেজরি বলেন, “করোনাভাইরাস হিন্দু ও মুসলমান উভয়কেই আক্রমণ করেছে। তাহলে আমরা কেন বিভেদ তৈরি করছি? আমাদের এই অতিমারী থেকেই তো শিক্ষা নেওয়া উচিত। ধর্মীয় ভেদাভেদ না রেখে আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করি তবে কোনও শক্তিই এই দেশকে পরাস্ত করতে পারবে না। কিন্তু যদি নিজেদের মধ্যেই লড়াই চালিয়ে যেতে থাকি তাহলে আর কোনও আশা নেই।